কোড (Code) হলো এমন একটি ভাষা বা সংকেত, যা কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশনা বা তথ্য উপস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়। কোড সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়, যা মানুষের ভাষাকে মেশিন বা কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষায় অনুবাদ করে। কোড লেখার প্রক্রিয়াকে প্রোগ্রামিং বলা হয়, এবং এটি সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, এবং অন্যান্য প্রযুক্তি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়।
কোড সাধারণত বিভিন্ন রকমের হতে পারে, যেমন প্রোগ্রামিং কোড, এনক্রিপশন কোড, এবং যোগাযোগ কোড। নিচে কোডের বিভিন্ন ধরন এবং তাদের বিবরণ দেওয়া হলো:
নিচে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা কোডের উদাহরণ দেওয়া হলো:
Python:
print("Hello, World!")
JavaScript:
console.log("Hello, World!");
HTML:
<h1>Hello, World!</h1>
C++:
#include <iostream> using namespace std; int main() { cout << "Hello, World!" << endl; return 0; }
কোড হলো কম্পিউটার এবং প্রযুক্তির একটি মৌলিক উপাদান, যা প্রোগ্রামিং, এনক্রিপশন, এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সফটওয়্যার তৈরি এবং ডিজিটাল যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোগ্রামিং এবং এনক্রিপশন কোডের মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা যায়।
বিসিডি কোড (BCD Code) বা Binary-Coded Decimal হলো একটি পদ্ধতি যেখানে দশমিক সংখ্যাগুলিকে বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়, কিন্তু প্রতিটি দশমিক সংখ্যা (০-৯) আলাদা করে ৪-বিট বাইনারি কোডে পরিবর্তিত হয়। এটি ডিজিটাল সিস্টেম এবং কম্পিউটারে সংখ্যার ইনপুট, আউটপুট, এবং গাণিতিক অপারেশন সহজে সম্পাদন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
১. ডিজিট-ওরিয়েন্টেড পদ্ধতি:
২. আলাদা ডিজিট এনকোডিং:
৩. সহজ এবং সরল গাণিতিক অপারেশন:
ধরা যাক, আমাদের দশমিক সংখ্যা 345 কে BCD পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে হবে:
তাহলে, BCD কোড হবে: 0011 0100 0101
১. সহজ এনকোডিং এবং ডিকোডিং:
২. ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী:
৩. কম্পিউটার সিস্টেমের নির্ভুলতা বজায় রাখা:
১. বেশি মেমোরি ব্যবহার:
২. অপ্টিমাইজড নয়:
৩. বিকল্প পদ্ধতি বিদ্যমান:
BCD (Binary-Coded Decimal) হলো একটি সংখ্যার এনকোডিং পদ্ধতি, যা দশমিক সংখ্যাগুলিকে ৪-বিট বাইনারি আকারে এনকোড করে। এটি সহজ এবং সরল, বিশেষ করে ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী। তবে এর মেমোরি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতার কারণে আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমে পিওর বাইনারি এবং অন্যান্য পদ্ধতির বেশি ব্যবহার দেখা যায়।
আসকি (American Standard Code for Information Interchange) হলো একটি ক্যারেক্টার এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড, যা কম্পিউটারে টেক্সট উপস্থাপন এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। ASCII প্রথমবারের মতো ১৯৬৩ সালে চালু হয় এবং এটি মূলত ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, এবং সাধারণ প্রতীকগুলিকে বাইনারি ফরম্যাটে এনকোড করতে সাহায্য করে, যা কম্পিউটার সহজে বুঝতে এবং প্রসেস করতে পারে।
১. ৭-বিট এনকোডিং:
২. ৮-বিট এক্সটেন্ডেড ASCII:
১. কন্ট্রোল ক্যারেক্টার (০-৩১):
২. স্পেস এবং প্রিন্টেবল ক্যারেক্টার (৩২-১২৭):
৩. এক্সটেন্ডেড ASCII (১২৮-২৫৫):
১. টেক্সট ফাইল:
২. প্রোটোকল এবং নেটওয়ার্কিং:
৩. প্রোগ্রামিং:
ASCII কোড | ক্যারেক্টার | বিবরণ |
---|---|---|
32 | (Space) | স্পেস |
48-57 | 0-9 | সংখ্যা |
65-90 | A-Z | বড় হাতের বর্ণমালা |
97-122 | a-z | ছোট হাতের বর্ণমালা |
10 | LF | লাইন ফিড (নতুন লাইন) |
13 | CR | ক্যারেজ রিটার্ন |
১. ভাষাগত সীমাবদ্ধতা:
২. অল্প ক্যারেক্টারের সমর্থন:
ASCII-এর সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্য ইউনিকোড চালু করা হয়, যা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষর এবং প্রতীক সাপোর্ট করে। ইউনিকোডে লক্ষাধিক ক্যারেক্টার এনকোড করা সম্ভব, যা আধুনিক সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেটের জন্য একটি কার্যকর সমাধান।
সারসংক্ষেপ: ASCII হলো একটি প্রাথমিক ক্যারেক্টার এনকোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি ভাষার অক্ষর, সংখ্যা, এবং প্রতীক এনকোড করতে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি সীমাবদ্ধ, তবুও এটি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইন্টারনেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ANSI কোড বলতে আমরা স্ট্যান্ডার্ড এনকোডিং বোধ করি, যা হল আমেরিকান ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউট (ANSI) দ্বারা প্রকাশিত একটি স্ট্যান্ডার্ড কোড। এটি ইউনিকোড না হলেও, একটি পুরাতন স্ট্যান্ডার্ড কোড হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা অধিকাংশ সিস্টেমে সমর্থিত হয়।
ANSI কোড একটি 8-বিট কোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, প্রতীক এবং সাধারণ পাঁচালী চিহ্ন সহ অন্যান্য স্থানীয় ভাষার ক্যারেক্টারগুলি কোড করে।
ইউনিকোড (Unicode) হলো একটি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড যা কম্পিউটারে বিভিন্ন ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্র এবং প্রতীকগুলিকে একটি একক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ কোড পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বিশ্বের সব ভাষার এবং স্ক্রিপ্টের জন্য একটি বৈশ্বিক সংকেত পদ্ধতি প্রদান করে, যার ফলে বিভিন্ন ভাষার লেখা এবং ডিজিটাল ডেটার সমন্বয় সম্ভব হয়।
বৈশ্বিক ভাষা সমর্থন: Unicode বিশ্বের প্রায় সমস্ত লেখার সিস্টেম, যেমন ল্যাটিন, আরবি, সেরিফ, কিরিলিক, হিন্দি, চীনা, জাপানি ইত্যাদির জন্য কোড পয়েন্ট সরবরাহ করে।
একক কোড পয়েন্ট: Unicode প্রতিটি চরিত্রকে একটি অনন্য কোড পয়েন্ট প্রদান করে। এই কোড পয়েন্টগুলি সাধারণত হেক্সাডেসিমাল সংখ্যায় উপস্থাপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি "A" এর Unicode কোড পয়েন্ট হলো U+0041।
বিভিন্ন ফরম্যাট: Unicode বিভিন্ন এনকোডিং ফরম্যাটে উপলব্ধ, যেমন UTF-8, UTF-16, এবং UTF-32। UTF-8 সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এটি ASCII-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইনক্রিমেন্টাল আভেদ: Unicode চরিত্রগুলি বিভিন্ন ভাষার এবং সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, যার ফলে এটি একটি আন্তর্জাতিক এবং আন্তঃসংস্কৃতি সমর্থনকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ সমর্থন: Unicode বিভিন্ন ভাষার ও লেখার সিস্টেমকে একসাথে কাজ করার সুযোগ দেয়, যা বৈশ্বিক যোগাযোগকে সহজতর করে।
সামঞ্জস্য: Unicode ব্যবহারে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং ডিভাইসে পাঠ্য একইভাবে প্রদর্শিত হয়, যা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত করে।
ডেটা সংরক্ষণ: Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার তথ্য এবং ডেটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, যা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে এবং গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ।
ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন: Unicode ব্যবহার করে ওয়েব ডেভেলপাররা বিভিন্ন ভাষার সমর্থনসহ মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
ডেটাবেস: Unicode ডেটাবেসে বিভিন্ন ভাষার এবং চরিত্রের ডেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
মোবাইল ডিভাইস: স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসে Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার লেখা সহজে প্রবাহিত করা যায়।
Unicode একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী কোডিং সিস্টেম, যা বিশ্বের সব ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্রগুলিকে একটি একক ফর্ম্যাটে উপস্থাপন করে। এটি বৈশ্বিক যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ভাষার লেখাকে সঠিকভাবে পরিচালনা এবং প্রদর্শন করার সুযোগ দেয়।
ইবিসিডিআইসি (EBCDIC): ইবিসিডিআইসি (EBCDIC)-এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে এক্সটেন্ডেড বাইনারি কোডেড ডেসিমাল ইনফরমেশন কোড (Extended Binary Coded Decimal Information Code)। বিশ্ব বিখ্যাত আইবিএম কোম্পানী তাদের নিজস্ব কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য এই কোড উদ্ভাবন করেছে। এটি ৮ বিটের কোড, যার ডান দিকের ৪টি এবং ৪ বিটের মধ্যে মাঝের ৩ বিট হলাে জোনাল বিট এবং সর্ব বামের বিটটি প্যারাটি বিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১. ৮-বিট এনকোডিং:
২. ডিজিটাল সিস্টেমে ব্যবহার:
৩. অভিন্ন চরিত্র সেট:
EBCDIC কোডে কিছু জনপ্রিয় অক্ষরের এনকোডিং:
১. অসংখ্যাকৃত:
২. বিভিন্ন সংস্করণ:
৩. ক্যারেক্টার সেটের সীমাবদ্ধতা:
EBCDIC হলো একটি ৮-বিট এনকোডিং পদ্ধতি যা মূলত IBM দ্বারা তৈরি হয়েছে এবং মেইনফ্রেম কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি কিছু ক্ষেত্রে কার্যকরী এবং ব্যবহৃত হয়, তবে আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে তুলনায় ASCII এর ব্যবহার বেশি প্রচলিত। EBCDIC বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং পুরানো সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর সীমাবদ্ধতা এবং অসঙ্গতি আধুনিক প্রযুক্তিতে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।